অপারেশন সার্চলাইট কি | operation searchlight bangla
অপারেশন সার্চলাইট কি জানতে চাও? তাহলে তুমি একজন সঠিক জায়গাতে এসেছ আজকেরে আর্টিকেলে operation searchlight bangla নিয়ে আলোচনা করব অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বুঝ এবং অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর এ প্রশ্নগুলোর উত্তর নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।
অপারেশন সার্চলাইট বলতে এমন এক রাত কে বোঝায় যে রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা নির্বিচারে বাঙ্গালীদের ওপর গুলি চালিয়েছে। এমনই একটি ভয়াবহ রাতকে বলা হয় অপারেশন সার্চলাইট অপারেশন সার্চলাইট কি এবং operation searchlight bangla চলো আমরা ঝটপট দেখে আসি সাথেই অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বুঝ এবং অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর।
অপারেশন সার্চলাইট কি | operation searchlight bangla
অপারেশন সার্চলাইট কি?? অপারেশন সার্চলাইট বলতে এমন এক কাল রাতকে বোঝাই কাল রাতে চালানো হয়েছে এই হত্যা জগতে প্রধান টার্গেট করা হয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদেরকে অপহরণ করা হয়েছে এবং তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে।
১৯৭০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন হলে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে না দিয়ে কুটকৌশল অনুসরণ করেন এবং বাঙালি জাতির সাহিত্য শাসন থেকে ক্রম স্বাধীনতার দিকে ঝুঁকে পড়ে। বহু সংখ্য আসন লাভ করি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাঙালির জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই
পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম অসহযোগ আন্দোলন শুরু করা হয়। এমন পরিস্থিতিতেই সরকার গণপরিষদের অধিবেশনে স্থগিত করে 1971 সালের 25 শে মার্চ বাঙালি হত্যার এই এক নীল নকশাই প্রণয়ন করেন অপারেশন সার্চলাইট নামক সেই নীল নকশায় বলি হয় হাজার হাজার নিরীহ বাঙালিরা।
বাংলাদেশের পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর শাসন কায়েম করার জন্য এই পাকিস্তানি সেনারা ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানের সামরিক সরকারের নির্দেশে এক জঘন্য এবং ঘৃণ্য বর্বর নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালি কে হত্যা করেছিল সেই সামরিক অভিযানকে তারা নাম দিয়েছিলেন অপারেশন সার্চলাইট।
অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বোঝো? অপারেশন সার্চলাইট এটি এক ধরনের হত্যাযজ্ঞের নাম যা পাকিস্তানি বাহিনীরা সৃষ্টি করেছিলেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীরা চেয়েছিলেন জোর করে
বাঙ্গালীদের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়ে তাদের মুখে এই মধুর ভাষা আরোপ করতে এবং তারা সারাজীবন পূর্ব বাংলার ওপর বৈষমূলক আচরণ করতে তারা কখনোই সঠিক এবং ন্যায্য অধিকার আদায় করতে দেয়নি বরং তারা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে,
বাঙালির ওপর বিভিন্নভাবে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন তারা অমানবিক নির্যাতন করেছেন তারা পূর্ব বাংলাকে অর্থনৈতিকভাবে শোষণ করেছেন এবং ১৯৪৭ সালে যখন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হয় তখন পূর্ব বাংলার অবদান ছিল অপারেশন পূর্ব বাংলা ভেবেছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলে তারা রাজনৈতিক অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বৈষম্য থেকে মুক্তি পাবে এবং তারা স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারবে।
কিন্তু তাদের এই স্বপ্ন পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী পরিণতি দেয়নি বরং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে তাদের উপর তৈরি হয় তুমুল ঝড় তাদের উপর সৃষ্টি হয় তোমার বৈষম্য তারা প্রতিটি পদে পদে বৈষম্যের শিকার হয়। শুধুমাত্র দশ বছরের ব্যবধানে ১৯৫৫ সাল থেকে শুরু করে 1965 সালের মধ্যেই পূর্ব বাংলার মানুষরা সবদিক থেকে বৈষম্যের শিকার হয়।
তারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় এবং সবদিক থেকে তারা পিছিয়ে পড়ে। তারা যে অর্থ আয় করে তার প্রায় বহুভাগ চলে যায় পশ্চিম পাকিস্তানের কারন সেই সময় পূর্ব পাকিস্তানি কোন একক সরকার ছিল না তখন শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের তাই তারা পশ্চিম পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি উন্নত করত
এই মাত্র ১০ বছরের মধ্যে পশ্চিম পাকিস্তান উন্নত শিফরে পৌঁছে যায় এবং পশ্চিম পাকিস্তানের সবকিছু তৈরি হয় যেমন ব্যাংক , শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হসপিটাল বেসরকারি এবং সরকারি আরো বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি আর এদিকে পূর্ব বাংলায় ছিল না কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না কোন ব্যাংকের ব্যবস্থা যার ফলে
তারা কোন মূলধন সঞ্চয় করতে পারত না বরং তারা যা আয় করতো তার সব ভাগ্য যেত শুধুমাত্র খাদ্য বস্ত্রের মধ্যে আবার এমন সময় দেখা গেছে যখন তারা খাদ্যের সংকটে খাদ্যের অভাবে মৃত্যুবরণ করেছে অর্থাৎ সব দিক মিলিয়ে দেখলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী প্রথম থেকেই পূর্ব বাংলার প্রতি করে আসছে তুমুল বৈষম্য মূলক আচরণ।
তারপর যখন বাঙালিরা একটু তাদের প্রতিবাদ করে তখন তারা এই অপারেশনের সার্চলাইট তৈরি করে 1971 সালের 25 শে মার্চ যাদের বাঙ্গালীদের ওপর নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায় তাদের এই হত্যাকাণ্ডই ছিল তাদের প্রধান ভুল। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ এ অপারেশন সংঘটিত হলেও মূলত মাছের প্রথম থেকে এক প্রস্তুতি চলতেই থাকে একদিকে ১৬ই মার্চ থেকে সহযোগিতার বৈঠক শুরু হয়।
অন্যদিকে জেনারেল টিক্কা খান মেয়ে যে খাদিম হোসেন এবং রাও ফরমান আলী অপারেশন সার্চলাইট এর নকশা কে চূড়ান্ত করেন । উনিশে মার্চ থেকেই পূর্ব বাংলার ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালির সৈন্যদের বিনিমন্ত্রণ করা শুরু হয় এবং একইদিনের জয়দেবপুরে বাঙালি সৈন্যদের নিরস্ত করতে গেলে সংঘর্ষ বাধে তারপর ৭ এ মার্চ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ জারি করে।
এবং জেনারেল হামিদ ক্যান্টনমেন্ট হতে ক্যান্টনমেন্টে ঘুরঘুর শুরু করেন ২০শে মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরে থেকে অস্ত্র ও রসদ খোলার শুরু হয়। সব প্রস্তুতি শেষে ২৫ শে মার্চ রাতে গণহত্যার জন্য বেছে নেওয়া হয় মেজর জেনারেল রাও ফরমানকে ঢাকা শহরের মূল দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং অন্যদিকে 1970 সালের নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ শে মার্চ 1971 সালে
গণপরিষদ অধিবেশনে আহবান করা হয় এর আলোচনার জন্য পাঁচ মার্চ রাতে ঢাকায় আসেন এবং ১৬ মার্চ থেকে পঁচিশ মাছ আলোচনায় বসেন। অর্থাৎ একদিকে অভিযান প্রস্তুতি অপরদিকে আলোচনায় দুটি একই সাথে চলতে থাকে। ওইদিকে ঢাকা ত্যাগ করেন কিন্তু সামরিক বাহিনীকে গোপনে নির্দেশ দিয়ে যান।
এই সামরিক অভিযান চালানোর জন্য অর্থাৎ অপারেশন সার্চলাইট কার্যকরী রাখার জন্য। তারপর ২৫ শে মার্চ রাতে দশটা থেকে শুরু হয় এই ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য এবং ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড। সাংবাদিক মান্থলী ম্যাচ করেনহাস এই ঘটনাকে বিশেষতকের সবচেয়ে ঘৃণ্যতম এক ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেছেন।
ওই দিন পাক সেনাবাহিনীর ব্যাটেলিয়ান শূন্য মেশিনগান মোটর নিয়ে এসে নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং অসংখ্য নরনারী শিশু যুবকদেরকে তারা হত্যা করেন তাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশের বুদ্ধিজীবী নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্র যুবকদেরকে দেশ থেকে মুছে দেওয়া এবং জাতিকে ক্রীতদাসের পরিণত করা।
শুধুমাত্র ঢাকাতেই নয় বরং সম্পূর্ণ বাংলাদেশের জেলাতে প্রায় পঞ্চাশ হাজার নর নারীকে হত্যা করা হয় পাক বাহিনীর প্রধান লক্ষ্যবস্তু ছিল জহিরুল হল জগন্নাথ হল পিলখানাস্ত তৎকালীন ইপিআর ব্যারাক ও রাজার বাগ পুলিশ লাইন প্রভৃতি এই স্থানগুলো ওই রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তারা গ্রেপ্তার করে
এবং পাকিস্তানের নিয়ে যাওয়া হয় বন্দী হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন আর ১৯৭১ সালের সেই ২৫ শে মার্চ কাল রাতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত গণহত্যা ধ্বংসযজ্ঞ কে ইতিহাসে অপারেশন সার্চলাইট হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়।
সর্বশেষে বলা যায় যে 1971 সালের 25 মার্চ রাতের সেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কর্তৃক এই জঘন্যতম এবং হিংস্রতম হত্যাকাণ্ডকেই ইতিহাসের পাতায় লিখে রাখা হয়েছে অপারেশন সার্চলাইট হিসেবে। এই বিশ্বের পাতায় হয়তো এমন হত্যাযজ্ঞ কখনো আর ঘটেনি এই ছিল প্রথম এবং সবচেয়ে জঘন্যতম।
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা সকলেই বুঝতে পেরেছেন অপারেশন সার্চলাইট কি এবং অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বোঝো। অপারেশন সার্চলাইট হলো সেই যখনই তোমার রাত যেই রাতে নিরীহ বাঙালিদের ওপর জঘন্যতম হানাদার বাহিনীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করে।
সেই রাতে প্রায় তারা ৫০০০০ নর নারী শিশু যুবকদেরকে হত্যা করেছিলেন ইতিহাসের পাতায় এটি হলো সবচেয়ে জঘন্যতম একটি হত্যাকাণ্ড। এই পড়া গুলো অনার্স প্রথম বর্ষ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ইতিহাস বই থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
আশা করছি আপনারা সকলেই বুঝতে পেরেছেন অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বোঝো অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বোঝায় এবং অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা করো এই সকল প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে। অপারেশন সার্চলাইট এই প্রশ্নটিই খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা দে বার বার আসে তাই আপনারা প্রত্যেকেই দেখে রাখুন এ প্রশ্নটি অনার্স প্রথম বর্ষের বই হতে সংগ্রহ করা হয়েছে।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হলো অপারেশন সার্চলাইট কি | operation searchlight bangla, অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বুঝ? অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা করো এবং অপারেশন সার্চলাইট বলতে কী বোঝায় অর্থাৎ অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
যারা অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলে তারা এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ দেখে নাও। অপারেশন সার্চলাইট হলো একটি কালো রাতের ইতিহাসের পাতায় সবচেয়ে জঘন্যতম এক ইতিহাস হিসেবে রচিত রয়েছে যারা অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে জানো না তারা এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ে নাও।।
বাংলা আইটিটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url