ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা কাকে বলে এবং ধনতন্ত্রে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান

আপনি কি ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা কাকে বলে এবং ধনতন্ত্রে অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান সম্পর্কে জানতে চান?? তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গাতে এসেছেন আজকের এই পোস্টে আমরা গণতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা কাকে বলে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা এর সমস্যা কি এবং সমস্যার সমাধান কি সে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা কাকে বলে এবং ধনতন্ত্রে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান
যারা অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের জন্য ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী আসুন আমরা দেখে নিয়ে ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা কাকে বলে এবং ধনতন্ত্রে অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান গুলো কি কি। 

ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা কাকে বলে 

যে অর্থ ব্যবস্থা তে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরকারের কোন হস্তক্ষেপ থাকে না অর্থাৎ সরকারবিহীন অর্থনৈতিক কর্মকান্ড এবং ব্যাক্তি উদ্যোগে মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে যে সকল অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত করা হয় তাকে বলা হয় পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থা কিংবা ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা। 

ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা কে আবার পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা বলা হয় কারণ ধন তান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা আর পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা এই দুইটি কথার মানে একই কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্যের উপস্থিতিতে একটি অর্থ ব্যবস্থাকে ধণতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা কিংবা পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থা বলা হয়।

ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে আরো কিছু সংজ্ঞা দেখে নিন, 
যে অর্থ ব্যবস্থা তে ব্যক্তি মালিকানা উপস্থিত থাকে সম্পদের উপর ব্যক্তি মালিকানা স্বীকৃত এবং রাষ্ট্র অধিকার নিশ্চিত করে তাকে বলা হয় ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা। 

সরকারি হস্তক্ষেপের অনুপস্থিতির বিশিষ্ট অর্থ ব্যবস্থা কে বলা হয় গণতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরকারের কোনরকম হস্তক্ষেপ থাকে না এমন অর্থ ব্যবস্থা কে বলা হয় ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা কিংবা পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থা। অর্থাৎ এই অর্থব্যবস্থার উপরে সরকার এককভাবে ক্ষমতা আরোপ করতে পারবে না। 

অথবা বলা যায় যেখানে ভোক্তার সার্বভৌমত্ব রয়েছে ভোক্তার অধিকার রয়েছে ভোক্ততে স্বাধীনভাবে যেকোনো পণ্য ক্রয় বিক্রয় করা হয় তাকে বলা হয় ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা তে ভোক্তার এবং বিক্রেতার অবাধ স্বাধীনতা রয়েছে তাকে বলা হয় ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা। 

প্রিয় পাঠক অথবা প্রিয় শিক্ষার্থী বৃন্দাবন আশা করছি তোমরা বুঝতে পেরেছো ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা কাকে বলে। গণতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা সম্পর্কে উপরে কয়েকটি সংজ্ঞা দেওয়া হলো তোমরা যেকোনো সংজ্ঞা মুখস্ত করতে পারো এই প্রতিটি সংজ্ঞা ধণতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার। এবার চলো আমরা দেখে আসি পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য সমূহ। 

পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য/ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য 

প্রতিটি অর্থব্যবস্থার কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যে বৈশিষ্ট্য গুলো তাদের নাম বহন করে যেমন বৈশিষ্ট্য দেখে তুমি বুঝতে পারবা কোনটা পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থা আর কোনটা মিশ্র অর্থ ব্যবস্থা কিংবা সমাজতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা।। আসো আমরা দেখে নেই পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যসমূহ। 
  • যে অর্থ ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরকারের কোন হস্তক্ষে লক্ষ্য করা যায় না তাকে মূলত বলা হয় পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থা পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থাকে আবার বলা হয় ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা। 
  • ধনতান্ত্রিক কিংবা পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে ব্যক্তি মালিকানা রয়েছে। প্রত্যেকের নিজস্ব স্বাধীনতা রয়েছে সম্পদের উপর ব্যক্তির মালিকানা স্বীকৃত এবং রাষ্ট্র এই অধিকার নিশ্চিত করে। যেমন বর্তমান বাংলাদেশ বর্তমান বাংলাদেশে আমাদের প্রত্যেকের সম্পদের উপরে প্রত্যেকের নিজস্ব মালিকানা রয়েছে এটি হলো একটি পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য ।
  • কিন্তু বাংলাদেশ মিশ্র অর্থব্যবস্থার অধিকারী বাংলাদেশ পুঁজিবাদী অর্থববস্থা আবার সমাজতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায় তাই বলা হয় বাংলাদেশ মিশ্র অর্থব্যবস্থার অধিকারী। 
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে ভোক্তার সার্বভৌমত্ব লক্ষ্য করা যায় পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় ভোক্তা সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত এখানে একজন ভোক্তা বাজারে যে চাইলে তার ইচ্ছা অনুসারে বিক্রয় কিংবা ভোগ করতে পারবে। এখানে কারোর ওপরে কেউ কোন চাপিয়ে দিতে পারবে না। এখানে ভোক্তার অবাধ স্বাধীনতা রয়েছে। 
  • একজন ভোক্তা চাইলে সে ১০ কেজি থেকে শুরু করে ২০ কেজি কিংবা ৩০ কেজি অর্থাৎ তার ইচ্ছা অনুসারে সে যত ইচ্ছা তত পণ্য ক্রয় করতে পারবে ভোগ করতে পারবে। কিন্তু সমাজতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থাতে একটি নির্দিষ্ট জুড়ে দেওয়া হয় যে একজন ভোক্তা চাইলে শুধু এতোটুকু পর্যন্তই পণ্য ক্রয় করতে পারবে কিংবা ভোগ করতে পারবে। 
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে ভোক্তা স্বাধীনতা রয়েছে ব্যক্তি মালিকানা রয়েছে বিক্রেতা স্বাধীনতা রয়েছে। 
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় উৎপাদকের সার্বভৌমত্ব রয়েছে। উৎপাদক তার ইচ্ছা অনুসারে পণ্য উৎপাদন করতে পারবে উৎপাদন ক্ষেত্রে তাকে কোন জবাবদিহি করতে হবে না যে সে এতোটুকুপূর্ণ উৎপাদন করবে নাকি আরো কম করবে। পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় একজন উৎপাদক চাইলে সে তার সকল সম্পদ ব্যবহার করে উৎপাদন করতে পারে। 
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মুনাফা নির্ভার উৎপাদন। এই অর্থব্যবস্থায় উৎপাদন করা হয় মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে যত বেশি মুনাফা আসবে তত বেশি উৎপাদন করা হবে। পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এখানে মুনাফার উপর নির্ভর করে উৎপাদন করা হয়।। 
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা যে খুব বেশি শোষণ করা হয়। 
  • পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থায় সরকারি কোন হস্তক্ষেপ থাকেনা। 
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুক্তবাজার প্রক্রিয়া দেওয়া হয়। 
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় চাহিদার উপর নির্ভর করে পণ্য এর যোগান নির্ধারণ করা হয়। 
প্রিয় পাঠক বৃন্দাবন আশা করছি তোমরা প্রত্যেকে বুঝতে পেরেছ পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থায় সরকারি মালিকানা লক্ষ্য করা যায় না সরকারি কোনো হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করার জায়গা এখানে ব্যক্তি-মাত নাম রয়েছে স্বাধীনতা রয়েছে উৎপাদকের স্বাধীনতা রয়েছে। এবার চলো আমরা দেখে আসি ধনতন্ত্রে অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান। 

ধণতন্ত্রে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান

আপনি যদি জানতে চান যে গণতন্ত্রের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান কি তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গাতে এসেছেন প্রতিটি ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থাতে কিন্তু কিছু সমস্যা দেখা যায়। ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থাতে শাসক শ্রেণীরা অন্যদেরও শোষণ খুব বেশি।

জ্বালায় ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থাতে পুঁজিপত্তিরা ধনীরা আরো বেশি ধনী হতে থাকে আর গরিবরা আরো বেশি গরীব হতে থাকে এটাই হল ধনতান্ত্রিক কিংবা পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার অন্যতম একটি সমস্যা। সমাধান দেখার আগে চলুন আমরা দেখে আসি ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সমস্যা গুলো।

ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থার সমস্যা 

আপনি যদি জানতে চান যে ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা সমস্যা গুলো কি কি এই অর্থব্যবস্থায় কি কি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গাতে এসেছেন। নিচে দেখুন দাওয়া রয়েছে ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থার সমস্যা সমূহ। 

 ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় উৎপাদন ব্যবস্থা মূলত ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকে যার ফলে শুধুমাত্র ধনী মানুষের উৎপাদন করতে পারে আর এরা সর্বোচ্চ লাভ করার জন্য উৎপাদন করে। ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থার অন্যতম কারণ হচ্ছে মুনাফা অর্জন করা মুনাফা অর্জনের কারণে এরা উৎপাদন করে এই অর্থব্যবস্থার অন্যতম একটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে অর্থনৈতিক বৈষম্য। 
  • ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় ধনী আর গরিবের মধ্যে বিরাট বৈষম্য সৃষ্টি হয়। 
  • পুঁজিবাদী অর্থববস্থায় সম্পদ শুধুমাত্র কিছুসংখ্যক মানুষের হাতে থাকে।
  • এই কিছু সংখ্যক মানুষরাই সম্পদকে ব্যবহার করে উৎপাদন করে।
  • ধনো তান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় অন্যতম একটি সমস্যা হচ্ছে এখানে মনোপলি এবং অলিগপলি তৈরি হয়।
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হয় শক্তিশালী করপোরেশনের দ্বারা।
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় প্রতিযোগিতা নষ্ট হয়। কারণ এখানে তারা নিজে নিজেরাই দাম নির্ধারণ করে।
  • পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থায় ন্যায্যমজুরি কখনো দেওয়া হয় না।
  • গরিবদেরকে আরো বেশি শোষণ করা হয়।
  • ধনীরা আরও বেশি বড়লোক হতে থাকে।
  • এই পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি শোষণ করা হয় গরিবদেরকে।
  • রাজমিস্ত্রি শ্রমিক দের কে খুব কম মজুরি দেওয়া হয়। তারা চাইলেও এর প্রতিবাদ করতে পারে না কারণ তারা দরিদ্র।
  • ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা তে চাকরি নিরাপত্তা খুবই কম।
  • এই অর্থব্যবস্থায় চাকরি হারানোর ভয় সর্বদা থাকে। 
  • এই অর্থব্যবস্থায় মানবিকতা খুবই কম। 
  • এখানে সবার উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন করা যাদের হাতে সম্পদ থাকে তারাই সেই সম্পদকে ব্যবহার করে উৎপাদন করে এবং শ্রমিকদেরকে শোষণ করে বেশি বেশি মনে অর্জন করে। 
  • এই অর্থব্যবস্থা তে মানুষ ঋণের চক্রে খুব বেশি পড়ে। 
  • এই অর্থ ব্যবস্থায়ী দুর্নীতি বাড়তে থাকে। 
  • সমাজে একাকীত্ব বেড়ে যায়। 
  • প্রতিযোগিতা বেড়ে যায়। 
  • রাষ্ট্রের আয় কম হয়। 
  • শ্রেণী বৈষম্য বেড়ে যায়। 
  • ধনীরা আরো বেশি ধনী হতে থাকে 
  • গরিবের সন্তানরা সুযোগ কম পায়। 
  • বাকস্বাধীনতা পর্যন্ত হারিয়ে ফেলে। 
ধনতান্ত্রিক কিংবা পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার সমাজ সম্পর্কে আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন এই অর্থব্যবস্থা সীমিত পরিমানে ঠিক কিন্তু অতিরিক্ত কিংবা সম্পূর্ণ দেশে যদি গণতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা বিরাজ করে তাহলে দেশের অবস্থা খুবই খারাপ দিকে চলে যায় এই অবস্থায় গ্রামীণ ব্যবসা পিছিয়ে পড়ে শহরমুখী অর্থনীতি তৈরি হয়।

আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন ধনতন্ত্রে অর্থনৈতিক সমস্যা সম্পর্কে এবার চলুন আমরা দেখে আসি এই সমস্যার সমাধান কি?? সমাধান সম্পর্কে নিজে দেখুন বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া রয়েছে।

ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান 

ইতিমধ্যেই আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে বুঝতে পেরেছেন ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সমস্যা সম্পর্কে ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় কি কি সমস্যা হয়। এবার আসুন আমরা দেখে নেই এই ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান গুলো কি কি। 

বিশুদ্ধ ধনাতন্ত্রের সম্পদের উপর ব্যাক্তি মার্কেলের স্বীকৃত এবং এই অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর কোনো ধরনের সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ইতিমধ্যে নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে এই ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি এখানে কখনো কোন রকম অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডতে সরকারি হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না। 

প্রত্যেক ভোক্তা আর ক্রেতাপ ইচ্ছামত পূর্ণ পছন্দ ক্রয় করতে পারবে এবং ভোগ করতে পারবে আবার প্রত্যেকেই উৎপাদনকারী কিংবা বিক্রেতার স্বাধীনভাবে পণ্যকে উৎপাদন করতে পারবে এবং পণ্য বিক্রয় করতে পারবে। আবার দৃষ্টিতে এইরকম সমাজকে বিশৃঙ্খল মনে হতে পারে।

কিন্তু বাস্তবে রূপে ধণতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থা বিশৃঙ্খল দেখা যায় না এটি হলো এক ধরনের অদৃশ্য হস্ত ধনতন্ত্রের বক্তা উৎপাদনকারী ক্রেতা এবং বিক্রেতা বহুমুখী কর্মের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। এই অদৃশ্য হস্ত টি বাজার প্রক্রিয়া কিংবা দাম প্রক্রিয়া নামে পরিচিত। 

উল্লেখ্য যে এই প্রক্রিয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাজার অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান হয় তাকে অ্যাডামস মিস এক অদৃশ্য হস্ত্র বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে এই অদৃশ্য হস্ত্রটি ধনতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে সকল সমস্যার সমাধান করে। এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন কিভাবে?? আসুন আমরা একটু আরও বিস্তারিতভাবে দেখে নেই। 

প্রথমত 
কি উৎপাদন করা হবে?? এই সমস্যা সমাধান স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বাজারে তৈরি হয় বাজারে প্রত্যেক ভোক্তা কিংবা করে তার স্বাধীনভাবে তার পছন্দ প্রকাশ করে ক্রেতা সাধারণ সে পছন্দ আর চাহিদার উপর ভিত্তি করেই উৎপাদনকারীরা কিংবা বিক্রেতারা ঠিক করে যে তারা কি কি পণ্য কি কি পরিমাণে উৎপাদন করবে। 

তাদের নিজস্ব এক আইডিয়া থাকে যে কতজন ক্রেতার কতটুকু সেই পন্য প্রয়োজন তারা সেই আইডিয়ার উপর নির্ভর করেই সেই পণ্য আবার উৎপাদন করে অন্যভাবে আরো বলা যায় যে বিক্রেতারা যখন জানতে পারবে যে ক্রেতারা কেমন পণ্য কতটুকু চাচ্ছে তখন বিক্রেতা যদি সেই পণ্য বেশি বেশি আমদানি করে কিংবা উৎপাদন করে তাহলে এতে  বেশি বেশি মুনাফা লাভ করা যাবে। 

বিক্রেতাদের মূল লক্ষ্য হলো বেশি বেশি মুনাফ অর্জন করা। বিক্রেতারা তখনই বেশি বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবে যখন তারা জানবে যে কোন কোন পণ্যের চাহিদা বেশি। চাহিদা সম্পন্ন পণ্য বেশি বেশি আমদানি করবে এতে মুনাফা লাভ করবে বেশি বেশি আবার কোন বিশৃঙ্খলাও দেখা যাবে না। 

দ্বিতীয়তঃ 
কিভাবে উৎপাদন করা হবে?? এই সমস্যা সমাধানও বাজার থেকেই পাওয়া যায়। প্রত্যেক উৎপাদনকারী কিংবা বিক্রেতারা মুনাফার লক্ষ্যে কম খরচে উৎপাদন করতে চায় তারা চেষ্টা করে সবচেয়ে কম খরচের মধ্যে কিভাবে বেশি বেশি উৎপাদন করা যাবে এতে মুনাফা লাভ বেশি হবে। 

বাজারে উৎপাদনে বিভিন্ন প্রকরণ পাওয়া যায় তাই তারা সেই উপকরণসমূহ ব্যবহার করে সবচেয়ে অল্প খরচের মধ্যে উৎপাদন করতে চায়। যেভাবে উৎপাদন করলে খরচ সর্বনিম্ন হবে এবং উৎপাদন সর্বোচ্চ হবে। তারা সেই পর্যায়ে উৎপাদন করে। অর্থনীতির দ্বিতীয় মৌলিক সমস্যার সমাধান স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পাওয়া যায়।। 

তৃতীয়ত 
কার জন্য তারা উৎপাদন করবে?? এই তৃতীয় সমস্যার সমাধানও তাদের বাজারে রয়েছে বাজারের এক পক্ষ থেকে ক্রেতা আর অপর পক্ষ থেকে বিক্রেতা ক্রেতার চাহিদার অনুসারে বিক্রেতারা যোগানের দিকে ঝুঁকে যেমন ক্রেতার চাহিদার উপর নির্ভর করে বিক্রেতার যোগান তৈরি করে। 

ক্রেতা চাই সবচেয়ে কম দামের মধ্যে সর্বোচ্চ পণ্য ক্রয় করতে আর বিক্রেতা চায় সর্বোচ্চ দামের মধ্যে সর্বনিম্নপূর্ণা বিক্রয় করতে এভাবে ক্রেতা আর বিক্রেতার মধ্যে বাজারে এক ধরনের দরকষাকষি সৃষ্টি হয় এই দর্কাসা কোষির মাধ্যমে তারা পণ্য একে অপরের সাথে আদান প্রদান করে।

এই দরকাসা কোষের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় ভারসাম্য দাম যে ভারসাম্য দাম কে কেন্দ্র করেই প্রত্যেক বিক্রেতা পণ্য বিক্রয় করে আর ক্রেতারা পণ্য ক্রয় করে। যেমন বর্তমান বাজারে আমাদের প্রতিটি শাক সবজির একটি ভারসাম্য দাম রয়েছে আলু বাজারে ৩০ টাকা কেজি আবার মরিচ ৬০ টাকা কেজি। 

কোন বিক্রেতা চাইলেই কিন্তু এই দামের উপরে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না কোন বিক্রেতা চাইলেই কিন্তু ৬০ টাকা দরে আলু বাজারে বিক্রি করতে পারবেনা আবার ১০০ টাকা কেজি মরিচ বিক্রি করতে পারবে না কারণ অন্যান্য বিক্রেতারা যেহেতু এই দাম মেনে বিক্রয় করছে সেক্ষেত্রে নতুন বিক্রেতাকেও এই দাম অর্থাৎ ভারসাম ও দাম অনুসরণ করেই পণ্য ক্রয় বিক্রয় করতে হবে। 

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সমাধান সম্পর্কে। উপরে আমরা ধনতন্ত্রে অর্থনৈতিক সমস্যা এবং ধণতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সমাধান সবকিছু সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।

পাঠকদের কিছু প্রশ্ন 

পুঁজিবাদী অর্থনীতি কে কি ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি বলা হয়??
হ্যাঁ পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক এই ধণতান্ত্রিক অর্থনীতি বলা হয়। 
পুঁজিবাদী অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য কি??
পুঁজিবাদী অর্থনীতি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এইখানে কোন সরকারি মালিকানাধীন থাকে না অর্থাৎ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে কোন সরকারি হস্তক্ষেপ থাকে না। পুঁজিবাদী অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ওপরে দেখে নিন তাহলে। 
পুঁজিবাদী অর্থনীতি তে শাসন শোষণ সবচেয়ে বেশি হয়??
হ্যাঁ পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে শাসন শোষণ খুব বেশি হয় এইখানে ধনীরা আরো বেশি ধনী হতে থাকে আর গরিবরা আরো বেশি গরীব হতে থাকে।

লেখকের শেষ কথা 

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম পুঁজিবাদী অর্থনীতি কিংবা ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি কাকে বলে আর ধনতন্ত্রে সমস্যা সমাধান গুলো কি কি। আশা করছি আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সকলে বুঝতে পেরেছেন ধনতন্ত্রে সমস্যা সমাধান গুলো কি কি আর ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি কিংবা পুঁজিবাদী অর্থনীতি কাকে বলে। আর কোন বিষয়ে আপনাদের আর্টিকেল প্রয়োজন কমেন্ট করে কিন্তু অবশ্যই জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বাংলা আইটিটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url